স্বদেশ ডেস্ক:
মুন্সীগঞ্জে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মোঃ শ্যামল বেপারী (৩৮) নামের এক প্রবাস ফেরত ব্যক্তিকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার (১৪ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার শিলই ইউনিয়নের পূর্বরাখি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শ্যামল ওই গ্রামের মৃত আব্দুল গনি বেপারীর ছেলে। তিনি দীর্ঘ দিন মালয়েশিয়াতে কর্মরত ছিলেন। ছয় মাস আগে দেশে ফিরে আসেন বলে জানা গেছে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে একা নিজ বসতঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় একই গ্রামের শাহাদাত বেপারী, ইব্রাহিম বেপারী ভাগিনা হাবিব ও মহিউদ্দিন বেপারীসহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে তার উপর সশস্ত্র হামলা চালান। এ সময় তারা শ্যামলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই সোহেল বেপারী জানান, ‘রাত ১টার দিকের ঘটনা। আমার ভাই ঘুমাইয়া ছিল বাড়িতে। শাহাদতের নেতৃত্বে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল চারদিকে ঘেরাও করে গুলি বর্ষণ করে এবং ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। পরে আমার ভাইয়ের ঘর ঢুকে তার পা, হাত ও শরীরে গুলি করে এবং পায়ের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ভাইকে মার্ডার করে যাওয়ার সময় এলাকায় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলে যায়। পরে আমরা বাড়ি গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।’
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, নিহতের শরীরের কয়েক জায়গায় গুরুতর ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও গুলির চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন জানান, ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যারা ঘটনাটি সংগঠিত করেছে, তারা পালিয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
ফেব্রুয়ারি মাসে এই সন্ত্রাসী গ্রুপ বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করেছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ভিডিও এবং তথ্য পুলিশের কাছে দেয়া ছিল বলে স্বজনরা জানান। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো ভূমিকা না রাখায় এমন ধরনের হত্যা করেছ বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, ওই সময় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আজকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটত না।